নিউজইশপ রিপোর্ট: মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবার মাধ্যমে লেনদেনকে আরো উৎসাহিত করার জন্যে গ্রাহক প্রান্তের খরচ সর্বনিন্ম পর্যায়ে নামিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন এ খাতের বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, অধিক লেনদেন ব্যয় প্রান্তিক মানুষদের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই সেবা গ্রহন করা থেকে দূরে রাখছে। তারা এমএফএস সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর আউট-চার্জ একক অঙ্কে নামিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন।
এক্ষেত্রে সরকারের চলমান ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই এমএফএস লেনদেনের চার্জ কমানোর পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপও কামনা করেন তারা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এমএফএস অপারেটররা স্বেচ্ছায় খরচ না কমালে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ করা উচিৎ।
তিনি বলেন, এমএফএস অপারেটররা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবসা করছে কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও এক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেনি। অথচ দশ বছর পেরিয়ে গেছে। এমনটা চলতে পারে না।
একই আহবান জানিয়েছেন, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-সিএবি) পরিচালক আশীষ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ক্যাশ-আউট চার্জ অনেক বেশি। দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া উৎসাহিত করার জন্য ক্যাশ-আউট চার্জ অবশ্যই এক অঙ্কে নামিয়ে আনতে হবে।
বর্তমানে, ক্যাশ আউট চার্জ এক হাজার টাকার জন্য ১৮ দশমিক ৫০ টাকা যদিও এমএফএস এজেন্টরা ২০ টাকা নিচ্ছে। তবে এখানে ব্যতিক্রম কেবল ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক সেবা ‘নগদ’। তারা ‘নগদ’ টু ‘নগদ’ লেনদেন ফ্রি করার পাশাপাশি ক্যাশ-আউটের জন্যে হাজারে ৯ দশমিক ৯৯ টাকা চার্জ নিচ্ছে।
এই ন্যূনতম হার পেতে একজন গ্রাহককে নগদ অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে এবং ন্যূনতম ক্যাশ-আউটের পরিমাণ ২,১০০ টাকা হতে হবে। ক্যাশ-আউট চাজের্র ওপরে, গ্রাহককে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ১৫ শতাংশ হারে একটি সম্পূরক শুল্ক দিতে হচ্ছে।
তবে, কেউ যদি অ্যাপটি ব্যবহার না করে মোবাইল অপারেটরদের ইউএসএসডি প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্যাশ আউট করতে যান, তবে এই হার এক হাজার টাকার জন্য ১২ দশমিক ৯৯ টাকা এবং এখানে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত করা হবে।
ক্যাশ আউট চার্জ হ্রাস করাতে নগদ-কে স্বাগত জানিয়ে আশীষ চক্রবর্তী বলেছেন, এটি তাদের গ্রাহকদের সহায়তা করতে পারে। তিনি বলেন, তবে অন্যান্য এমএফএস অপারেটরদের চাপ অগ্রহ্য করে ‘নগদ’ কতদিন এই অফার চালিয়ে যেতে পারবে।
আশীষ বলেন, অন্যদেরও নগদের এই পদক্ষেপ অনুসরণ করা উচিৎ। কারণ স্বল্প হারে ক্যাশ আউট চার্জ লেনদেনকে ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে তুলতে এবং বহুগুণে এ শিল্পের আকার প্রসারিত করতে পারে।
নগদ চার্জ হ্রাস করলেও অন্যরা এখনো তা করতে অনিচ্ছুক। বরং তারা নগদের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে।
নতুন ক্যাশ আউট চার্জ বান্তবায়ন করতে নাগাদ আগের অংশ থেকে তাদের আয়ের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। তবে বাজারের অন্যান্য অপারেটররা এখনও আগের মতো ক্যাশ-আউট চার্জ করছে।
নগদ বলেছিল, ক্যাশ আউট চার্জ একক অঙ্কে নামিয়ে আনার পরেও এই বিভাগ থেকে তাদের আয় এখনও একই আছে।
এ বিষয়ে ‘নগদ’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, তারা শুরু থেকেই অন্যান্য অপারেটরের তুলনায় কম চার্জ নিয়ে গ্রাহক-বান্ধব সেবা দিয়ে আসছে।
একক অঙ্কের ক্যাশ আউট চার্জ দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ত্বরান্বিত করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত এক দশক ধরে বেশ কয়েকটি এমএফএস অপারেটর উচ্চ চার্জ আরোপ করে গ্রাহকের পকেট কাটছে।
সংবাদ নিয়ে আলোচনা