নিউজইশপ রিপোর্ট: কোভিড-১৯ পূর্ববর্তী সময়ে দেশের মোট বিক্রি হওয়া মোবাইল ফোনের মাত্র দেড় থেকে দুই শতাংশ বিক্রি হচ্ছিল অনলাইন প্ল্যাটফর্মে। এই অংশটি সামনের দিনে অনেক বেশী বাড়ার সম্ভাবণা তৈরী হয়েছে বলে মনেকরছেন মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীরা।
সোমবার ‘মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি কোভিড-১৯’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনায় হ্যান্ডসেট কোম্পানিগুলো বলছে, বৈশ্বিক এই মহামারি অনেক ব্যবসার ধরণ বদলে দেবে। হ্যান্ডসেট খাতেও এই ধাক্কায় অনেক কিছুই সামনের দিকে বহু এগিয়ে যাবে।
কোভিডের এই ধাক্কায় বাংলাদেশের বেসিক বা ফিচার ফোন নিয়ন্ত্রিত বাজারও আগের চেয়ে অনেক বেশী স্মার্টফোনের দিকে ছুটবে বলে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ট্রানসন বাংলাদেশ লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ানুল হক বলেন, অনেক চেষ্টার পরেও দেশের মানুষ অনলাইনে মোবাইল ফোন কেনার ওপরে আস্থা রাখছিল না। বরং তারা বাজারে ঘুরে যাচাই করে পন্য কিনতে পছন্দ করতো।
তাছাড়া অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর আস্থাহীনতাও একটা বড় কারণ বলে মনেকরেন মোবাইল ইম্পোটার্স এসোসিয়েশেনের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক।
টেকনো এবং আইটেল হ্যান্ডসেট বাজারজাত করা রেজওয়ানুল বলেন, পাশের দেশ ভারতে প্রতি বছর ২৬ কোটি হ্যান্ডসেট বিক্রি হয় যার ৫০ শতাংশের ওপর বিক্রি হয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে। সামনের দিনে বাংলাদেশেও এমন অংক না হওয়ার কোনো কারণই দেখছেন না তিনি।
ফেয়ার গ্রুপ বাংলাদেশে স্যামসাং ব্র্যান্ডের হ্যান্ডসেট তৈরী করছে। এই গ্রুপের চিফ মার্কেটিং অফিসার মোহাম্মদ মেসবান উদ্দিন বলেন, করোনার সময়ে মানুষ ঘরে বসে থাকে অনেক বেশী ডিজিটাল সেবা ব্যবহার করতে শিখেছে। ফলে করোনা পরবর্তীতে স্মার্টফোনের চাহিদাও অনেক বাড়বে। আর এই চাহিদার বেশীরভাগ অংশই তাদেরকে নানা কারণে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পুরণ করতে হবে।
দেশে নোকিয়া হয়ে ব্যবসা প্রসারের জন্যে কাজ করছে এইচএমডি বিশ্বব্যাপী অয়। এই কোম্পানির হেড অব বিজনেস ফারহান রশিদ বলেন, এতো দিন অনলাইন সেগমেন্টে কেনা-বেচা খুব একটা না বাড়ার কারণ আসলে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো তেমন একটা এগিয়ে আসেনি।
শাওমি বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরীও আগের তিনজনের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে বলেন, ব্যবসায়ের অনেকটাই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে উঠে যাবে। “এক্ষেত্রে প্রচারণা ও বিপনন কৌশলও আমাদেরকে নতুন করে সাজাতে হবে।”
ডন সামদানির সঞ্চালনায় আলোচনা তারা বলেন, অনলাইনে কেনাবেচা বাড়লে তখন কিস্তিতে ফোন বিক্রি হওয়ার পরিমানও বাড়বে। তাতে সামগ্রিকভাবে দেশের মোবাইল ফোনখাতেরই লাভ হবে।
২০১৯ সালে দেশে সব মিলে তিন কোটি ১১ লাখ হ্যান্ডসেট বিক্রি হয়েছিল। যার মধ্যে ২৬ শতাংশ ছিল স্মার্টফোন। ২০২০ সালে নিশ্চিত করে মোট হ্যান্ডসেট বিক্রি কমে যাবে। তবে এখন থেকে যেগুলো বিক্রি হবে তার বড় অংশই চলে যাবে স্মার্টফোনের দখলে।
ফলে দেশে ফিচার ফোন বা বেসিক ফোনের বিক্রি না বাড়লেও স্মার্টফোনের বিক্রি বাড়বে বলে মনেকরছেন তারা।
আফটার সেলস সার্ভিসের বিষয়ে আলোচকরা অনলাইন কাস্টমার কেয়ারেও ওপরেও জোর দেন। তাদের মত, অনলাইনে যোগাযোগ বা একটা ফোন কলের মাধ্যমেই অর্ধেক সমস্যার সমাধাণ করা সম্ভব।
সংবাদ নিয়ে আলোচনা